বৃহস্পতিবার, ১০ই এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৭শে চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পথের পাঁচালী—বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অনবদ্য সৃষ্টি

সাইদ মাহবুব

🕒 প্রকাশ: ০২:০০ অপরাহ্ন, ৬ই ডিসেম্বর ২০২৩

#

ছবি : সংগৃহীত

“পথের পাঁচালী” বাংলা সাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অনবদ্য সৃষ্টি। বিহারের ভাগলপুরে থাকাকালীন ১৯২৫ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পথের পাঁচালী রচনার কাজে হাত দেন। যদিও এর লেখা শেষ হয় ১৯২৮ সালের এপ্রিল মাসে। এই দীর্ঘ সময় নেওয়ার কারণ, উপন্যাসটিতে প্রথমে তিনি দুর্গা চরিত্রটি ভাবেননি।

ভাগলপুরে একদিন বিকেলে এক গ্রাম্য কিশোরীকে দেখতে পান। মেয়েটির মাথায় তেলহীন রুক্ষ চুল হাওয়ায় উড়ছিল। এই মেয়েটিকে দেখেই তিনি দুর্গার চরিত্র কল্পনা করেন। ফলে একবার লেখা শেষ করলেও তাঁকে উপন্যাসটি আবার নতুন করে লিখতে হয়। উপন্যাসটি লেখা শেষ হলে প্রথম প্রকাশ হয় উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত মাসিক পত্র বিচিত্রা-য় এবং পরবর্তিতে ১৯২৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রঞ্জন প্রকাশনালয় থেকে সজনীকান্ত দাস কর্তৃক পথের পাঁচালী গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।

প্রখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পথের পাঁচালী গল্পে গ্রামের সাধারণ জীবনকে তুলে ধরেছেন। দরিদ্র এক পরিবারের সংগ্রামী জীবনযাপনকে ফুটিয়ে তুলেছেন। গ্রামবাংলার দুই ভাই-বোন অপু আর দুর্গার বেড়ে ওঠা নিয়েই বিখ্যাত এই উপন্যাসটি।

আরো পড়ুন : দেবীপক্ষে, দেবীর পক্ষে

অপু ও দুর্গার বাবা পুরোহিত হরিহর রায়। মা সর্বজয়া। তাদেরকে নিয়ে কোনোমতে সংসার চালান হরিহর। এরমধ্যে হরিহরের দূর সম্পর্কের বিধবা পিসি এসে বাড়িতে উঠেন। যা সর্বজয়া ভালো চোখে দেখেন না। এমনি এক গ্রাম্য পরিবারের অভাব অনটনকে ঘিরেই গল্পটি আবর্তিত। উপন্যাসটি ছোটদের জন্য আম আঁটির ভেঁপু নামকরণ করে সংস্করন করা হয়েছে।

পরবর্তিকালে ১৯৫৫ সালে উপন্যাসটি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থায়নে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। চলচ্চিত্রে পরিচালক চরিত্র বিনির্মাণে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন। 

পথের পাঁচালীতে মুখ্য চরিত্র অপু ও দুর্গার শৈশবকে কেন্দ্র করে বিংশ শতাব্দীর বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা চিত্রায়িত করা হয়েছে। চলচ্চিত্রটি স্বল্প ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করলেও অর্থের অভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কাজ শুরুর দীর্ঘ তিন বছর পর কাজ সম্পন্ন হয়। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর এটি ১৯৫৫ সালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৫৬ কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার লাভ করে। যার ফলে সত্যজিৎ রায়কে ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন বলে গণ্য করা হয়। এছাড়াও ২০২২ সালে চলচ্চিত্রটি ভারতীয় চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রের পুরষ্কার লাভ করে। 

এস/ আই. কে. জে/ 


পথের-পাঁচালী

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন